(প্রযুক্তি প্রতিদিন) ৪ ফেব্রুয়ারি ফেসবুকের বয়স ১০ বছর পূর্ণ হবে। তবে ফেসবুক তৈরি করেই বসে নেই মার্ক জুকারবার্গ। তিনি প্রযুক্তি শিল্পে ব্যাপক পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা করছেন।
গত ২৮ থেকে ২৯ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় অনুষ্ঠিত ‘ওপেন কম্পিউট প্রোজেক্ট’ নামের এক সম্মেলনে ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ তাঁর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানান। প্রযুক্তি শিল্পে কীভাব বড় ধরনের পরিবর্তন আনা সম্ভব, বিষয়টি তুলে ধরেন ফেসবুকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। আজ থেকে তিন বছর আগে ফেসবুকের উদ্যোগে শুরু হয়েছিল ‘ওপেন কম্পিউট প্রোজেক্ট’।
ওপেন সোর্স সফটওয়্যারের মাধ্যমে বড় কম্পিউটিং সেন্টারগুলোর দক্ষতা বাড়াতে এবং খরচ কমানোর কাজে সাহায্য হিসেবে এই প্রকল্প শুরু করেছিল ফেসবুক। প্রোগ্রামারদের ধারণা ও কোডিং বিষয়ক বিভিন্ন কার্যক্রম সারা বিশ্বে শেয়ার করার উদ্দেশ্যে এই প্রকল্প গ্রহণ করেছিল ফেসবুক।
সম্মেলনে উপস্থিত প্রকৌশলীদের সামনে জুকারবার্গ তাঁর পরিকল্পনা সম্পর্কে জানান, যেখানে পৌঁছানোর লক্ষ্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের সাইট তৈরি করেছিলেন, গত এক দশকে সেখানে নিয়ে গেছেন ফেসবুককে। তাঁর বাকি লক্ষ্যও অর্জন হওয়ার পথে। তবে এখনই থেমে যেতে চান না তিনি।
ফেসবুকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা জুকারবার্গ ফেসবুকের পর এখন হাই-টেক ব্যবসাগুলোতে বিশাল পরিবর্তন আনার স্বপ্ন দেখছেন। এখনকার যুগে শুধু ডেটা সেন্টারের ওপর নির্ভরশীল ব্যবসাগুলোকে পরিবর্তন আনতে কাজ করবেন তিনি।
প্রযুক্তি শিল্পে পরিবর্তন আনতে জুকারবার্গ কোনো প্রতিষ্ঠানের একচ্ছত্র আধিপত্যকে দূর করতে পেরেছেন। এ কাজে সাহায্য করেছে ওপেন সোর্স। আমাজন, গুগল ও ইয়াহুর মতো প্রতিষ্ঠানগুলো যে প্রযুক্তি সুবিধা নিয়ে প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ব্যবসা করে যাচ্ছিল, সে বাধা দূর করে অন্যদেরও সুযোগ করে দিয়েছেন তিনি। ওপেন কম্পিউটের মাধ্যমে ক্রাউডসোর্সিং পদ্ধতিতে কম্পিউটিংয়ের সমস্যা সমাধান করেছেন জুকারবার্গ।
তিনি জানান, যখন কেউ প্রথম কোনো জিনিস তৈরি করে, তার পক্ষে সেটা গোপন করার সুবিধা নেওয়া সহজ হয়। তবে আমাদের কাছে ওপেন সোর্স বা মুক্ত থাকা পদ্ধতিটি সুবিধাজনক মনে হয়েছে এবং আমরা এক্ষেত্রে অনেক দূর এগিয়ে গেছি। ফেসবুক পরিবেশ-বান্ধব জ্বালানি ব্যবহারের যে প্রকল্প হাতে নিয়েছে, তাতে পরিবেশের সুরক্ষার পাশাপাশি শক্তির অপচয় রোধ হচ্ছে। বায়ুশক্তি ও জলবিদ্যুত্ ব্যবহার করে গত বছর ফেসবুক বড় অঙ্কের অর্থ সাশ্রয় করেছে। এ ক্ষেত্রটিতে জাকারবার্গ আরও বেশি গুরুত্ব দিতে চান।
এছাড়াও জুকারবার্গ কাজ করছেন ইন্টারনেট অরগানাইজেশন নামের আরেকটি প্রকল্প নিয়ে। বিশ্বজুড়ে ইন্টারনেট সাশ্রয়ী করতে জুকারাবার্গের এই উদ্যোগের সঙ্গে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠান স্যামসাং, মার্কিন সেমিকন্ডাক্টার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান কোয়ালকম, এরিকসন, মিডিয়াটেক, নকিয়া ও অপেরা। এ প্রকল্পের অধীনে প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতাপ্রতিষ্ঠানগুলো সাশ্রয়ী দামে উন্নত প্রযুক্তি ও ইন্টারনেট সুবিধার স্মার্টফোন তৈরি করবে।
জাকারবার্গ জানান, বর্তমানে ফেসবুকের আকার আর মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতার মাপকাঠিতে দায়িত্ব অনেক বেড়ে গেছে বলেই মনে করেন তিনি।১০ বছর আগে যখন হার্ভার্ডের ছোট ডরমেটরিতে ফেসবুক যাত্রা শুরু করেছিল, তখনো হয়ত এত বড় স্বপ্ন দেখেননি জুকারবার্গ।