(প্রযুক্তি প্রতিদিন) দেশে ডিকোডার স্থাপনে সম্মত হয়েছে ব্ল্যাকবেরি। ডিকোডার স্থাপন করলে ব্ল্যাকবেরির গ্রাহকদের বিভিন্ন তথ্য রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলো পর্যবেক্ষণের সুযোগ পাবে। এ ধরনের ব্যবস্থা না থাকায় সেবাটিকে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য এত দিন হুমকি মনে করছিল বিভিন্ন সংস্থা। দেশে বর্তমানে ব্ল্যাকবেরি সেবার সংরক্ষিত তথ্যে আইনগত প্রবেশাধিকার (এলআই) নেই রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর। ফলে নিরাপত্তা বিঘিœত হওয়ার পাশাপাশি রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও অপরাধ প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে জানিয়ে বিটিআরসিকে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে বলে সংস্থাগুলো। এর পরিপ্রেক্ষিতে দেশে ডিকোডার সার্ভার বসাতে ব্ল্যাকবেরিকে অনুরোধ করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। ব্ল্যাকবেরির মোবাইলফোন সেবায় ব্যবহার করা হয় বিশেষ ধরনের সফটওয়্যার। এর ফলে গ্রাহকের হ্যান্ডসেট (এনক্রিপটর) ও প্রাপকের হ্যান্ডসেট (ডিক্রিপটর) ছাড়া কোন তথ্য অন্য কেউ উদ্ধার করতে পারে না। তবে দেশে ডিকোডিং সার্ভার স্থাপিত হলে প্রাপক ছাড়াও চাইলে নিরাপত্তা সংস্থাগুলো তথ্য উদ্ধার করতে পারবে। বর্তমানে ব্ল্যাকবেরির মূল সেবাটি নিয়ন্ত্রিত হয় কানাডা থেকে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অঞ্চলভিত্তিক সার্ভার রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। সেবার মানোন্নয়নে যুক্তরাজ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাত, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে সার্ভার বসিয়েছে তারা। এর বাইরে ভারতেও প্রতিষ্ঠানটির সার্ভার রয়েছে। দেশটির নিরাপত্তার বিষয় নিশ্চিত করতেই আরআইএমকে ভারতে সার্ভার বসাতে হয়েছে। তবে বাংলাদেশে সেবাটি দেয়া হয় ব্ল্যাকবেরির গ্লোবাল সার্ভারের মাধ্যমে।
বিটিআরসি জানিয়েছে, দেশে সব মিলিয়ে ব্ল্যাকবেরির গ্রাহকসংখ্যা ছয় হাজার ২০০-এর কিছু বেশি। প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবহারকারীর মধ্যে রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগসহ আরো বেশ কিছু সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়াসহ আরো কয়েকটি দূতাবাসও এ সেবার গ্রাহক। ব্ল্যাকবেরি পোস্টপেইড সেবার ক্ষেত্রে ব্ল্যাকবেরি এন্টারপ্রাইজ সার্ভিস (বিইএস), ব্ল্যাকবেরি ইন্টারনেট সার্ভিস (বিআইএস) ও ব্ল্যাকবেরি মেসেঞ্জার সার্ভিস (বিএমএস) নামের তিনটি সেবা রয়েছে। সবগুলো সেবাই গ্রাহকদের কাছে জনপ্রিয়। বিশ্বব্যাপী ৯১টি দেশের প্রায় ৫০০ অপারেটর ব্ল্যাকবেরির এ সেবা দিয়ে থাকে। একক ব্যবহারকারী হিসেবে এর সবচেয়ে বড় গ্রাহক যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ। প্রতিষ্ঠানটির প্রায় আড়াই লাখের মতো ব্ল্যাকবেরি সংযোগ রয়েছে।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, ডিকোডার স্থাপনে সম্মত হয়েছে ব্লাকবেরি কতৃপক্ষ। এ-সংক্রান্ত যন্ত্রাংশ আনার প্রক্রিয়া চলছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এটি স্থাপন করা সম্ভব হবে। অনুমোদনের শর্তানুযায়ী সেবা চালুর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ব্ল্যাকবেরি সেবার সংরক্ষিত তথ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন সংস্থার প্রবেশাধিকারের বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলা হয়। তবে এখন পর্যন্ত অপারেটররা তা করতে পারেনি।