(প্রযুক্তি প্রতিদিন) থ্রিজি লাইসেন্স পেলে সবচেয়ে বেশি তরঙ্গ নেবে দেশের সব থেকে বড় মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জানিয়েছেন, কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী গ্রামীণ ব্যাংক রক্ষার পর সরকারের দ্বিতীয় লক্ষ্য গ্রামীণফোন।
তিনি আরও জানান, গ্রামীণফোনের নাম ও লাইসেন্স অবৈধ। গ্রামীনফোন নামটির বৈধতা সম্পর্কে আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘ইউনূস সাহেবের দাবি, গ্রামীণফোনের সঙ্গে গ্রামীণ ব্যাংকের কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু আমরা বলি, আছে।
ইউনূস সাহেব তার নোবেল বক্তৃতাতেও বলেছেন, গ্রামীণফোনের মাধ্যমে নারীরা প্রযুক্তি শিখবে, তাদের ক্ষমতায়ন হবে। গ্রামীণফোনের লাইসেন্স অবৈধ হওয়ার কারন এই লাইসেন্সটা একজন নিয়েছেন আর ব্যবহার করছেন আরেকজন।
কয়েক দিন আগে গ্রামীণ কমিশনের সদস্য আজমালুল হোসেন কিউসি একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী জানান, সেটি এখন যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
কিউসির দেওয়া প্রতিবেদনটি তার একান্ত মতামত, না কি কমিশনের মতামত, সে ব্যাপারে সংশয় রয়েছে। এ ব্যাপারে কমিশনের অন্য সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলবেন বলে জানান অর্থমন্ত্রী।
গ্রামীণফোন এখন পর্যন্ত দেশে বিনিয়োগ করেছে ২৩ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশে এটাই কোনো একক কোম্পানির সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ।
সরকারি কোষাগারে রাজস্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে দেশের সবচেয়ে বড় কোম্পানি গ্রামীণফোন। গত ১৫ বছরে কোম্পানিটি সরকারি কোষাগারে দিয়েছে ৩০ হাজার ৮৭৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) নানা ধরনের কর ও শুল্ক দিয়েছে ১৯ হাজার ৩৭৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
বিটিআরসিকে বিভিন্ন ফি হিসেবে দিয়েছে ৩ হাজার ৮১৪ কোটি ২০ লাখ টাকা, লাইসেন্স ও স্পেকট্রাম ফি হিসেবে দিয়েছে ৩ হাজার ২২ কোটি ৯০ লাখ টাকা, বিটিসিএল ও বাংলাদেশ রেলওয়েকে দিয়েছে ২ হাজার ৩০৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং গ্রামীণফোন উইথহোল্ডিং কর দিয়েছে আরও ২ হাজার ৩৫৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
কোন কোন ক্ষেত্রে গ্রামীণফোন থেকে সরকারের পাওনা টাকা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। যেমন সিম রিপ্লেসমেন্ট ইস্যুতে এনবিআরের বৃহৎ করদাতা ইউনিটের (এলটিইউ) হিসেব মতে পৃথকভাবে কর বাবদ গ্রামীনফোনের কাছ থেকে ১ হাজার ৫৮০ কোটি পাওনা রয়েছে।
সম্প্রতি থ্রিজি নিলামে অংশ না নেওয়ারও হুমকি দিয়ে আসছিল গ্রামীণফোনসহ অন্যান্য মোবাইল অপারেটররা। গত ২৬ আগস্ট থ্রিজি নিলামের ‘বিড আর্নেস্ট মানি’ জমা দেওয়ার শেষ দিনেও টাকা দিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করে প্রতিষ্ঠানগুলো। ফলে নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয় ২৯ আগস্ট।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এখন এমন সংকটময় মুহূর্তে গ্রামীণফোন থ্রিজি লাইসেন্স নিলামে অংশ না নিলে দেশে স্বপ্নের থ্রিজি বাস্তবে রুপ নাও নিতে পারে।