ভাষার মাসে টিকটকের #আমারভাষা ক্যাম্পেইন

‘আমারভাষা’ ক্যাম্পেইন

ভাষার মাসে ২১ শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উজ্জাপন উপলক্ষে টিকটক শুরু করেছে ‘আমারভাষা’ ক্যাম্পেইন। ভাষাগত বৈচিত্র্য, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে প্লাটফর্মটির ক্রিয়েটর এবং দর্শকদের একত্রিত করছে এই ক্যাম্পেইন।

এবছরের ১৯শে ফেব্রুয়ারি থেকে ২৩শে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলা এই ক্যাম্পেইন শুধুমাত্র বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন দিবসের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য নয়, বরং এদেশের সংস্কৃতি, শিল্প এবং সৃজনশীলতার বাস্তব চিত্র তুলে জন্য একটি জীবন্ত ক্যানভাস হিসেবে কাজ করে। টিকটকের ‘হ্যাশট্যাগ আমার ভাষা’ এবং ‘হ্যাশট্যাগ বইমেলা’ ল্যান্ডিং পেজগুলি ডিজিটাল হাব হিসাবে কাজ করে যেখানে বাংলা বর্ণমালার বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জ এবং সৃজনশীল কনটেন্টের মাধ্যমে জাতি হিশেবে একজন বাংলাদেশীর পরিচয়কে গুরুত্ত দেওয়া হয়।

বাংলা কমিকের জন্য সুপরিচিত ক্রিয়েটর অন্তিক মাহমুদ কাজ করছেন বাংলাভাষার শিল্প নিয়ে এবং ক্রিয়েটর অথই কাজ করছেন বাংলা বই নিয়ে। তাদের মতো অনেক ক্রিয়েটররাই বাংলা ভাষায় তাদের প্রতিভা তুলে ধরছেন এবং এই ধরণের ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।

অন্তিক মাহমুদ বলেন, ‘২১শে ফেব্রুয়ারি নিজের মাতৃভাষা নিয়ে গর্ব করার দিন। এটি কেবল বাংলা নয়, অন্য যে কোনও ভাষাও হতে পারে যা আমরা যোগাযোগের জন্য ব্যবহার করি। ভাষা কখনও বাধা সৃষ্টি করতে পারে না। এটি একটি সংস্কৃতিকে প্রতিনিধিত্ব করে। তাই আমি আমার সৃষ্টিকর্মে বাংলা ভাষা ছাড়া অন্য কোনও ভাষা ব্যবহার করতে চাইনি। ভাষার প্রতি ভালবাসার চিত্রায়ন সাদামাটা ভাবে করা উচিত নয়। নিজ মাতৃভাষার প্রতি আমাদের সৃজনশীল এবং উদ্ভাবনী হতে হবে। নিজেদের মাতৃভাষার জন্য গর্বিত বলার পরিবর্তে, আমাদের তা তুলে ধরতে হবে। আমি মনে করি টিকটকের ‘আমারভাষা’ ক্যাম্পেইনটি নিজস্ব ভাষা প্রদর্শনের জন্য একটি আকর্ষণীয় উদ্যোগ।

ক্রিয়েটর অথই বলেন ‘২১শে ফেব্রুয়ারি আমাদের মধ্যে যারা বাংলা ভাষা ভালবাসে, নিজের মাতৃভাষাকে ভালবাসে, তাদের জন্য একটি আবেগপূর্ণ দিন। আমাদের এখনও টিকটকে বাংলায় আরও ভাল কন্টেন্ট দেওয়ার এবং তৈরি করার অনেক কিছু আছে। এই কারণেই এই প্ল্যাটফর্মে আমি বই সম্পর্কিত কনটেন্ট তৈরি করতে শুরু করেছি। আমি বইমেলায় টিকটকের বুকটক ক্যাম্পেইন দেখেছি এবং আমি মনে করি টিকটকের ‘আমার ভাষা’ ক্যাম্পেইনটিও একটি দুর্দান্ত উদ্যোগ। আমি আশা করি ভবিষ্যতে টিকটক বাংলা ভাষা নিয়ে আরও বেশি কিছু করবে’।

এছাড়াও ক্রিয়েটর রনি শরাফত ঐতিহ্যবাহী উৎসব উজ্জাপন এবং ক্রিয়েটর লাবিবা তার সৃষ্টিকর্মের মাধ্যমে বাংলাদেশী সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করছেন যা আমাদের অনন্য সংস্কৃতির বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছে।

ক্রিয়েটর রনি শারাফাত বলেন “২১ তারিখ মানে এমন একটি দিন যা আমাকে যা ইচ্ছা তা বলার স্বাধীনতা দেয় এবং আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে কীভাবে আমরা ভাষা শহীদদের উৎসর্গ করে আমাদের মাতৃভাষা পেয়েছি। বাংলা গানের ব্যবহার, বাংলা শব্দের সাথে কনটেন্টের শিরোনাম এবং বাংলাদেশী সংস্কৃতির পাশাপাশি বাংলা বইয়ের প্রচারের মাধ্যমে বাংলা ভাষার প্রচারের জন্য আমি টিকটককে একটি আদর্শ প্ল্যাটফর্ম বলে মনে করি। এখানে প্রচারের অনেক উপায় রয়েছে এবং এর মধ্যে আমি অনুসরণ করে থাকিঃ স্থানীয় লোকসঙ্গীত ব্যাবহার করে কনটেন্টের পরিকল্পনা করা, স্থানীয় মানুষের সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময় ওই অঞ্চলের স্থানীয় ভাষা ব্যবহার করা, বাংলা শব্দের নান্দনিকতা তুলে ধরা, গান ও দৃশ্যপটের সাথে সামঞ্জস্য স্থাপন করা এবং ভাল বাংলা বই পড়া। টিকটকের এই ‘আমার ভাষা’ ক্যাম্পেইনটি আমাদের মাতৃভাষার জন্য আমরা কী করতে পারি তা আরও সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলতে একটি দুর্দান্ত উদ্যোগ।”

শিল্পী লাবিবা বলেন, “২১শে ফেব্রুয়ারি আমাদের মাতৃভাষার জন্য সংগ্রামের ক্ষেত্রে আমাদের পূর্বপুরুষদের ধৈর্য, ত্যাগ, এবং স্থিতিস্থাপকতার প্রতীক। একজন স্নিকার আর্টিস্ট হিসাবে, আমি আমার শিল্পের মাধ্যমে আমার সংস্কৃতি এবং ভাষা তুলে ধরার যথাসাধ্য চেষ্টা করি এবং টিকটক এক্ষেত্রে আমাকে আমার সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য সারাবিশ্বের সাথে শেয়ার করে নিতে সাহায্য করেছে। অন্যান্য ক্রিয়েটররাও বাংলাভাষা/বাংলাদেশ সংবলিত হ্যাশট্যাগ, নিজেদের ভিডিওতে বাংলা গান এবং পোস্টে বাংলা ক্যাপশনের মাধ্যমে আমাদের সংস্কৃতি ও ভাষার প্রতিনিধিত্ব করছেন। আমি মনে করি এই ক্যাম্পেইনটি বিশেষভাবে আমাদের শিল্প বা কনটেন্টের মাধ্যমে আমাদের ভাষাকে ধরে রাখার একটি দুর্দান্ত সুযোগ “।

এই ক্যাম্পেইনটি এমন একটি সুযোগ সৃষ্টি করেছে যেখানে সাংস্কৃতিক বিভিন্ন মুহূর্তগুলি উদযাপনের মহাত্ত আরও বাড়িয়ে দেয়। এখানে সকলে বিভিন্ন ধরণের পোস্ট, ভিডিও শেয়ার এবং চ্যালেঞ্জ অংশগ্রহণের মাধ্যমে নিজেদের সংস্কৃতি তুলে ধরছে। ক্রিয়েটররা, তাদের বৈচিত্র্যময় কনটেন্টের মাধ্যমে, কেবল বাংলাদেশের সৌন্দর্যই তুলে ধরছেন না, বরং এদেশের ভাষা, শিল্প ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণে সক্রিয়ভাবে অবদান রাখছেন।