৪০ বছরের সফল প্রযুক্তিপণ্য মোবাইল ফোন

(প্রযুক্তি প্রতিদিন) ১৯৭৩ সালের ৩ এপ্রিল মটোরোলার জ্যেষ্ঠ প্রকৌশলী মার্টিন কুপার প্রথমবারের মতো মোবাইলফোনে বিশ্বের প্রথম ফোনকলটি করেছিলেন। আর এ কারনেই গত ৩ এপ্রিল পালিত হলো মোবাইল ফোনের ৪০ তম জন্মদিন। চার দশক পেরিয়ে ২০১৩ সালের ৩ এপ্রিল মোবাইল ফোন পা দিলো ৪১তম বছরে। মোবাইল ফোনের ‘জনক’ বলা হয় মার্টি কুপারকে। বর্তমানে তাঁর বয়স ৮৫ বছর। মোবাইল ফোন উদ্ভাবনের পর থেকে ক্রমাগত পাল্টেছে এর ধরন। একসময় যা ছিল ইটের মতো মোটাসোটা, এখন তা এতটাই হালকা-পাতলা হয়েছে যে সহজেই পকেটে বহনযোগ্য।
শুরুর দিকে মোবাইল ফোনের দাম ছিল প্রায় ৩,০০০ ডলার এবং আকারে বেশ বড়। শুরুতে আকার আর দামের কথা চিন্তা করে মোবাইল ফোন বাণিজ্যিক পণ্য হিসেবে খুব একটা সুবিধা করতে পারবে না বলে মনে করেছিলেন কুপার। তবে তিনি স্বপ্ন দেখতেন এমন একটা মোবাইলফোনের যা এতোই ছোট হবে যে, কানে ঝুলিয়ে রাখা যাবে। অবশেষে তার স্বপ্ন সত্যি হতে চলেছে। ক্ষুদে এপণ্যটি আমাদের জীবনযাত্রার উন্নয়নে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছে। গত বছর ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন জানিয়েছিলো, চার দশকে পৃথিবীতে মোবাইল ফোন সংযোগের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ৬০০ কোটি। আর এই একই সময় পৃথিবীর জনসংখ্যা ছিলো ৭০০ কোটি।
ভাবতে অবাক লাগলেও সত্যি আজ থেকে প্রায় চার দশক আগে মানুষের হাতে এসেছিল প্রথম মোবাইল ফোন। সেটি ছিল মটোরোলার গবেষক মার্টিন কুপারের আবিষ্কৃত ডায়না টিএসি। কুপার সেই মোবাইল ফোন দিয়ে প্রথম কথা বলেছিলেন তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বেল ল্যাবসের গবেষক জোয়েল এনজেলের সঙ্গে।
মটোরোলাতে কাজ করতেন মার্টিন কুপার। ওই সময় মটোরোলার ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন প্রযুক্তিবিদ জন মিশেল। তিনি একদিন কুপারের সামনে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, বিশ্বের প্রথম মুঠোফোন তৈরি করবে মটোরোলা আর আবিষ্কারক হবেন কুপার।
মার্টিন কুপার ডায়না টিএসি তৈরিতে সফল হয়েছিলেন ১৯৭৩ সালের ৩ এপ্রিল। তবে সেটি বর্তমান সময়ের হালকা-পাতলা স্মার্টফোনের মতো ছিল না। সোয়া এক কেজি ওজনের সেই সেলুলার ফোনটি লম্বায় ছিল ১০ ইঞ্চি। একবার ব্যাটারি চার্জ হলে ২০ মিনিট কথা বলা যেত। নিউইয়র্ক সিটির সিক্সথ অ্যাভিনিউতে হাঁটতে হাঁটতে প্রথমবারের মতো সেলুলার নেটওয়ার্কে ফোনকল করেন কুপার। টেলিফোনে বিশ্বের প্রথম ফোনকলটি গ্রহণ করেছিলেন বেল ল্যাবসের প্রধান গবেষক জোয়েল এনজেল। সেসময় সেলুলার নেটওয়ার্কে স্থানান্তরযোগ্য মুঠোফোন তৈরিতে কাজ করছিলেন জোয়েল এনজেল।
এর প্রায় ১০ বছর পর প্রথমবারের মতো বাজারে আসে মটোরোলার তৈরি ডায়না টিএসি। এ মুঠোফোনটিতে বড় বড় ২০টি বাটন বা বোতাম ছিল, সঙ্গে বিশাল একটি বড় অ্যানটেনাও ছিল। একবার চার্জ হওয়ার পর কিছুক্ষণ কথা বলেই আবারও ১০ ঘণ্টা চার্জ দিতে হতো। ডায়না টিএসির দাম ছিল চার হাজার ডলার।