স্কাইপের মাধ্যমে ছড়ানো ম্যালওয়্যার : বিটকয়েন

(প্রযুক্তি প্রতিদিন) অনলাইন জগতে জনপ্রিয় ভিডিও বা অডিও কল করার সেবা স্কাইপের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ম্যালওয়্যারটি শনাক্ত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। কম্পিউটার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ক্যাসপারস্কি ল্যাবের বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, একটি নির্দিষ্ট কম্পিউটার অ্যালগরিদম ব্যবহার করে যেকোনো কম্পিউটার থেকে উৎপন্ন করা যায় বিটকয়েন। একবার আক্রান্ত হোয়ার পর ব্যবহারকারীদের অজান্তেই তাদের কম্পিউটার থেকে লোভনীয় বিটকয়েন উৎপন্ন হচ্ছে ও বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা নেটওয়ার্কে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে।
২০০৯ সালে প্রথম চালু হয় বিটকয়েন ব্যবস্থা। শুরুর দিকে প্রতি বিটকয়েনের মূল্যমান দু-তিন মার্কিন ডলারের নিচে ছিল। ২০১১ সালের জুনে হঠাৎ প্রতি বিটকয়েন ৩৩ ডলারে পৌঁছে যায়। অবশ্য ধীরে ধীরে তা কমে ৪ ডলার পর্যন্ত নামে। ফেব্রুয়ারি ২০১৩ পর্যন্ত ৪ থেকে ২০ ডলার সীমার মধ্যে ওঠানামা করছিল বিটকয়েনের দাম। একারনে অনেকেই এখন বিটকয়েনকে একটি জল্পনাভিত্তিক বাণিজ্যিক উপাদান হিসেবে দেখছেন। আর এর দর উত্থান-পতনে লাভবান হওয়ার সুযোগটি কাজে লাগাচ্ছেন ম্যালোয়ার উৎপাদকরা।
ক্যাসপারস্কি ল্যাবের বিশেষজ্ঞ দিমিত্রি বেসতোজেভ জানিয়েছেন, শুরুতে কোনো স্কাইপ বন্ধুর অ্যাকাউন্ট থেকে আসা বার্তায় পাঠানো লিংকে ক্লিক করার মাধ্যমে ম্যালওয়্যারটি কম্পিউটারে চালু হয়। গোপনে বিটকয়েন উৎপাদক নেটওয়ার্কে কম্পিউটারটিকে সংযুক্ত করে রাখে। ফলে পিসির কার্যক্ষমতার একটি বড় অংশ ব্যয় হতে থাকে পিয়ার টু পিয়ার ব্যবস্থায় বিটকয়েন উৎপাদনে। এটি এক প্রকার ট্রোজান, যা সিপিইউ ইউসেজ বাড়িয়ে দেয় ভয়ানক হারে। ফলে পিসি অনেক ধীর হয়ে যায়। তাছাড়া একটি কম্পিউটারে ঢুকতে পারলে ম্যালওয়্যারটি আরো দুটি ট্রোজান ছেড়ে কম্পিউটার সিস্টেমকে আক্রান্ত করে। বর্তমানে ইতালি, পোল্যান্ড, কোস্টারিকা, স্পেন, রাশিয়া, জার্মানি, ইউক্রেনের কম্পিউটারগুলোই এ ধরনের ট্রোজানে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। এ ম্যালওয়্যারগুলো কম্পিউটারকে আক্রমণ করার পর ইন্টারনেটে রিমোর্ট সার্ভারের সঙ্গে পিসির ব্যাকডোর যোগাযোগ রক্ষা করে চলে। এ পদ্ধতিতে ব্যবহারকারীদের তথ্যও চুরি করছে অপরাধীরা। তবে স্কাইপের এটাই প্রথম ম্যালওয়্যার নয়। গত বছরের অক্টোবরেও ব্যাপক স্প্যামিংয়ের শিকার হন স্কাইপ ব্যবহারকারীরা। ভারতের বিভিন্ন আইপি থেকেই স্কাইপের ওপর বেশি আক্রমণ পরিচালিত হয় বলে সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণ করেছেন। কারন ভারতে স্কাইপ ব্যবহারকারী বেশি।
পিসি ট্রোজান আক্রান্ত হয়েছে কিনা তা বুঝতে পারবেন যদি কোনো কার্যক্রম ছাড়াই পিসির সক্ষমতা কমে যায়। তখন বুঝতে হবে ট্রোজানগুলো সিপিইউ ইউসেজ বাড়িয়ে দিয়েছে। এজন্য বিশেষজ্ঞরা নিরাপত্তার স্বার্থে কোনো অপরিচিত সন্দেহজনক লিংকে ক্লিক না করার পরামর্শ দেন স্কাইপ ব্যবহারকারীদের। তাছাড়া বিশ্বস্ত বৈধ উৎসগুলো থেকে স্কাইপের হালনাগাদ সংস্করণ ডাউনলোড করে ব্যবহার করার মাধ্যমে স্কাইপ অ্যাকাউন্ট ও কম্পিউটার সিস্টেমের নিরাপত্তা বাড়বে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।