সক্রিয় হচ্ছে বটনেট জালিয়াত গ্রুপ

সাধারনত অনলাইনে বিজ্ঞাপন ক্লিক করে দেখলে সেখান থেকে অর্থ পায় বিজ্ঞাপনদাতা ও প্রদর্শক সাইট। আর জালিয়াতরা এ সুযোগই কাজে লাগাচ্ছে।
সাইটে প্রদর্শিত বিজ্ঞাপনগুলো কোটি কোটিবার দেখা হচ্ছে বলে তারা অনলাইনের মাধ্যমে বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছে মিথ্যা তথ্য পেশ করছে। সাইটে প্রদর্শন করার কারণে প্রকাশকদের অর্থ দিতে বাধ্য হন বিজ্ঞাপনদাতারা। সম্প্রতি ২০০টির মতো সাইটে বিজ্ঞাপন ও ওয়েব পেজ দেখার মিথ্যা তথ্য দিয়ে ডিসপ্লে বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছ থেকে মাসে ৬০ লাখ ডলার বেশি হাতিয়ে নিয়েছ একদল বটনেট জালিয়াত। অনলাইন নিরাপত্তা সংস্থা স্পাইডার ডট আইওর মতে, অনলাইন প্রকাশকদের ছোট একটি দল এ কাজে শ্যামেলিওন নামের একটি বটনেট ব্যবহার করছে। এ জালিয়াতির সাথে কোনো একক প্রতিষ্ঠান নাকি একাধিক দল কাজ করছে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে যারা বটনেটটি ব্যবহার করছেন, তাদের মূল উদ্দেশ্য অর্থ রোজগার। আন্তর্জাতিক মানদন্ড অনুযায়ী, বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের জন্য প্রদর্শন সাইটগুলো বিজ্ঞাপন আয়ের ৫৫-৬৫ শতাংশ পায়। বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্কগুলো পায় আয়ের ৩০ শতাংশ। শ্যামেলিওন নামে পরিচিত এ বটগুলোর মূল কাজ মিথ্যা অ্যাড ইম্প্রেশন (বিজ্ঞাপন দেখার সংখ্যা) তৈরি করা। গবেষকরা জানান, বটগুলো অ্যাডবি ফ্ল্যাশে চলে এবং জাভাস্ক্রিপ্ট সচল করতে পারে। বেশির ভাগ ডিসপ্লে বিজ্ঞাপনই ফ্ল্যাশ প্লেয়ার সফটওয়্যারে চলে। বটগুলোর বিজ্ঞাপনের ক্লিক করার হার দশমিক ২ শতাংশ, যা মানুষের বিজ্ঞাপন দেখার হারের চেয়ে সামান্যই বেশি। এমনকি এ সফটওয়্যারগুলো মাউস পয়েন্টান নড়াচড়ার মিথ্যা রেকর্ডও তৈরি করে।
অনলাইন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, শ্যামেলিওনের আগের বটনেটগুলোর মূল কাজ ছিল স্প্যাম পাঠানোর পাশাপাশি অবৈধ ওষুধের বিজ্ঞাপন বা জালিয়াতি সাইট চালানো। তবে শ্যামেলিওনের লক্ষ্যবস্তু ২০০টির মতো পরিচিত বিজ্ঞাপন সাইট। সাইটগুলোয় প্রদর্শিত বিজ্ঞাপন প্রতি মাসে ৯০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ কোটিবার দেখা (অ্যাড ইম্প্রেশন) হচ্ছে বলে বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছে মিথ্যা তথ্য পাঠায় শ্যামেলিওন।
ব্যবহারকারীরা অবশ্য কখনই হুটহাট করে যেকোনো বিজ্ঞাপন দেখে না। অনেক ক্ষেত্রেই বটনেট সরাসরি জালিয়াতির জন্য দায়ী থাকে না। অনেক হ্যাকাররাও সুযোগ পেয়ে বটনেটটিকে ব্যবহার করে। তবে সবক্ষেত্রেই লাভবান হচ্ছে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন সাইটগুলো। আলফাবার্ড ও ডিজিমুঘল নামের দুটি সাইট এ ধরনের বটনেটের মাধ্যমে লাভবান হচ্ছে।