শরীর ও মন চাঙ্গা রাখে ভিডিও গেমস

(প্রযুক্তি প্রতিদিন) ভিডিও গেমসে শারীরিক পরিশ্রমের প্রয়োজন হয় বলে অনেকের কাছেই এটি অপছন্দের বিষয়। তবে গেমারদের কাছে সবসময়ই ভিডিও গেইমস আকর্ষণীয় ও আনন্দদায়ক। গেমারদের জন্য সুখবর হলো ভিডিও গেমসের উপকারি দিকও রয়েছে।
সাইবার থেরাপি ও টেলিমেডিসিন এর বার্ষিক প্রতিবেদন দেখা গেছে, দুশ্চিন্তা এবং বিষন্নতায় ভোগা গেমারদের মানসিক অবস্থার উন্নতিতে ভিডিও গেইম গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ভিডিও গেইমের কাল্পনিক শত্রু ঘায়েল করে মানসিক প্রশান্তি অনুভব করেন তারা। আর এক্ষেত্রে দুশ্চিন্তা ও বিষণ্নতা থেকে সৃষ্ট হতাশা ও আক্রমনাত্মক মনোভাবের দাওয়াই হিসেবে কাজ করে ভিডিও গেম।
এছাড়াও নানাধরনের মানসিক কষ্টের পাশাপাশি শারীরিক ব্যথাও ভুলিয়ে দেয় ভিডিও গেম। হাসপাতালের রোগীদের জন্য নতুন এক গেম বানিয়ে পরীক্ষা চালিয়েছিলেন ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াশিংটন-এর মনস্তত্ববিদরা। বিজ্ঞানীরা বেশ অবাক হয়ে লক্ষ্য করেন, গেমের ব্যস্ততা ও আনন্দ রোগীকে ভুলিয়ে রাখছে শারীরিক ব্যথা-যন্ত্রণা।
ভিডিও গেম খেললে বৃদ্ধি পায় চিন্তাশক্তি। এমসিমাস্টার ইউনিভার্সিটির ভিজুয়াল ডেভলপমেন্ট ল্যাবের গবেষক ড. ড্যাফেন মরার জানিয়েছেন, ক্যটারাক্টসে ভুক্তভোগীরা মেডেল অফ অনার, কল অফ ডিউটির মতো ফার্স্ট পার্সন শুটিং গেইম খেলার মাধ্যমে চিন্তাশক্তি বাড়াতে পারেন। এরকম গেম খেলতে প্রয়োজন পড়ে গভীর মনোযোগের। ফলে গেমারের পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা ও চিন্তাশক্তি দু’টোই বৃদ্ধি পায়।
বেশিরভাগ অ্যাকশন গেইমসে গেমিং চরিত্রকে নিয়ে দ্রুত বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতে হয় গেমারকে। গেমারের সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতার ওপর নির্ভর করে গেইমিং চরিত্রের কার্যক্রম। নিউ ইউর্কের ইউনিভার্সিটি অফ রচেস্টার-এর নিউরো গবেষকরা জানিয়েছেন, এরকম ফার্স্ট পার্সন শুটিং গেইম খেলার ফলে মস্তিষ্কের ব্যবহার বাড়ে গেমারের। এতে বৃদ্ধি পায় গেইমারের বাস্তব জীবনে সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা।
ইউনিভার্সিটি অফ ইউটাহ-এর এক গবেষণায় গবেষকরা জানিয়েছেন, যেসব শিশু বিভিন্ন শিক্ষামূলক গেম খেলে, তাদের মধ্যে এ অসুখগুলোর প্রভাব কমে যায়। লক্ষ্য করা গেছে এ ধরনের গেম খেলা শিশুদের অসুখের বিরুদ্ধে লড়াই করার মনোভাব বাড়ে। গবেষকদের ধারণা, যারা এরকম গেইম খেলে তাদের নিউরাল মেকানিজম, পজিটিভ ইমোশন ও রিওয়ার্ড সিস্টেম অ্যাক্টিভেট হয়ে তাদের অসুখের বিরুদ্ধে প্রতিদিন লড়াই করার শক্তি যোগায়।
অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের ডেকান ইউনিভার্সিটির গবেষকরা জানান, তারা ৫৩ জন শিশুর ওপর গবেষণা করে পেয়েছেন, ইন্টারঅ্যাকটিভ ভিডিও গেম খেলে এমন শিশুদের সমস্যা নিয়ন্ত্রণের নিজস্ব পদ্ধতি সৃষ্টি হয়।
একাকিত্ব দূর করে গেমস। একাকিত্বের কারণে অনেক বয়স্ক ব্যক্তি ভোগেন নানারকম মানসিক সমস্যায়। ভিডিও গেম খেলার মাধ্যমে বয়স্ক ব্যক্তিরা সহজেই কাটাতে পারেন আনন্দদায়ক সময়, এমনটিই জানিয়েছেন নর্থ ক্যারোলাইনা ইউনিভার্সিটির গবেষকগণ।