মার্কিন নজরদারিতে শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান

(প্রযুক্তি প্রতিদিন) যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা (এনএসআই) ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এফবিআই) বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় অনলাইন প্রতিষ্ঠানগুলোর কেন্দ্রীয় সার্ভারের সব তথ্যে নজরদারি করছে। অ্যাপল, ফেসবুক, মাইক্রোসফট ও গুগলের মতো প্রতিষ্ঠান রয়েছে এ নজরদারিতে। প্রতিষ্ঠানগুলোর কেন্দ্রীয় সার্ভারের অডিও-ভিডিও চ্যাট, ছবি, ই-মেইল ও অন্যান্য তথ্য চলে যাচ্ছে সরকারে কাছে। সরকারের এ নজরদারি কার্যক্রমের কোড নাম প্রিজম। ২০০৭ সালের মে মাসে প্রিজম চালু হয়। ২০০৭ সালে অভ্যন্তরীণ নজরদারির জন্য প্রিজম প্রোগ্রাম চালু করেন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ। বিদেশী গুপ্তচরবৃত্তি পর্যবেক্ষণ আদালতের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ওই সিদ্ধান্ত নেয়। মার্কিন কংগ্রেস ২০০৭ সালের প্রোটেক্ট আমেরিকা অ্যাক্ট ও সিক্রেট ফরেন সার্ভাইবাল কোর্টের (ফিসা) ২০০৮ সালের সংশোধনী অনুসারে এ বিষয়ে অনুমোদন দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের সরকার প্রিজমের নামে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর কেন্দ্রীয় সার্ভারে প্রবেশ করে। সেখান থেকে অন্যান্য কনটেন্টের পাশাপাশি ব্যবহারকারীর লগ ইন তথ্যও সংগ্রহ করা হচ্ছে। এভাবে নজরদারির বিষয়ে সাধারণ মানুষকে কোনো কিছু জানায়নি সরকার। তবে সরকারি নজরদারির বিষয়টি অস্বীকার করে এক বিবৃতি দিয়েছে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো। এর আগেও অসংখ্যবার ব্যবহারকারীর তথ্য তছরুপের বিষয়ে অভিযোগ ওঠে অনলাইন জায়ান্ট গুগলের বিরুদ্ধে। গুগল জানায়, তারা ব্যবহারকারীর তথ্যে কখনই সরকারকে নাক গলানোর সুযোগ দেয়নি। মাইক্রোসফট জানায়, তারা সরকারের গোয়েন্দাগিরিতে অংশ নেয় না। তবে সরকার চাইলে তাদের সহায়তা করে। সরকার তদন্ত বা নিরাপত্তার স্বার্থে কখনো কখনো নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টের তথ্য চাইলে মাইক্রোসফট তা সরবরাহ করে। অ্যাপল কতৃপক্ষ জানিয়েছে, ‘আমরা প্রিজমের কথা শুনিনি। আমাদের সার্ভারে কখনই সরকারি সংস্থাকে প্রবেশাধিকার দেইনি। সরকার কোনো গ্রাহকের তথ্য চাইলেও, সে ক্ষেত্রে আদালতের মাধ্যমে যথাযথ অনুমোদন নিয়ে আসতে হয়।’ ফেসবুকের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা জো সুলিভান জানিয়েছেন, ‘আমরা ফেসবুকের সার্ভারে কোনো সরকারি সংস্থাকে প্রবেশাধিকার দেই না। কোনো ব্যক্তি সম্পর্কে তারা তথ্য চাইলে, আমরা অন্য আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তা যাচাই করি। আইন অনুযায়ী যে তথ্য দেয়ার সুযোগ থাকে, আমরা কেবল ততটুকুই প্রকাশ করি।’ ইয়াহুর মুখপাত্র জানান, তারা ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা গুরুত্বের সঙ্গে মূল্যায়ন করেন। তারা কোনোভাবেই সার্ভার, সিস্টেম বা নেটওয়ার্কে সরকারকে সরাসরি প্রবেশাধিকার দেন না।
এ প্রোগ্রামের প্রথম অংশীদার হিসেবে মাইক্রোসফটকে বেছে নেয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। এরপর ছয় বছর ধরে তথ্য সংগ্রহ করতে থাকে। অথচ কয়েক বছর ধরে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা ও সরকারের নজরদারি নিয়ে তুমুল বিতর্ক চলছে।