ভারতে ব্যান্ডউইথ রপ্তানি করবে বাংলাদেশ

(প্রযুক্তি প্রতিদিন) ভারতের ৭টি রাজ্যের তথ্য-প্রযুক্তি খাত ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ থেকে ব্যান্ডউইথ চেয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। বাংলাদেশে ২০৮ গিগাবাইট অব্যবহৃত ব্যান্ডউইথ থেকে ৫০ গিগাবাইট ব্যান্ডউইথ ভারতে রপ্তানি করবে।
সম্প্রতি ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ প্রস্তাব দিয়েছে ঢাকা সফররত দেশটির একটি প্রতিনিধি দল। একই বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে ব্যান্ডউইথ আমদানির জন্যও আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দেওয়া হয়। এ প্রস্তাবে সরকার সায় দিলে দেশটি বাংলাদেশ থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর জন্য ৫০ গিগাবাইট পার সেকেন্ড (জিবিপিএস) ব্যান্ডউইথ আমদানি করবে। রাজ্যগুলো হচ্ছে আসাম, ত্রিপুরা, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, মনিপুর ও অরুণাচল প্রদেশ।
বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারতীয় প্রতিনিধিদেরকে আশ্বাস দেওয়া হয়, বাংলাদেশের কাছে উদ্বৃত্ত ব্যান্ডউইথ থাকায় ভারতের প্রস্তাবে সাড়া দিবে বাংলাদেশ।
বৈঠক শেষে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, ব্যান্ডউইথ রপ্তানির ব্যাপারে নীতিগতভাবে সম্মতি রয়েছে। তবে ভারতের কাছ থেকে লিখিত প্রস্তাব না পাওয়া পর্যন্ত এ নিয়ে আর অগ্রসর হওয়ার সুযোগ নেই। ভারত যতটুকু চাচ্ছে তার দ্বিগুণ ব্যান্ডউইথ রপ্তানি করা সম্ভব। তবে আমরা এ ব্যাপারে যথেষ্ট রক্ষণশীল। দ্রুত বেড়ে চলা চাহিদার বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা এগুচ্ছি। দেশের ভেতরেও দ্রুত ব্যান্ড উইথ চাহিদা বাড়ছে। বর্তমানে দেশে ৩ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী রয়েছেন, যাদের বড় অংশই পর্যাপ্ত গতির ইন্টারনেট ব্যবহার করেন না। গতি বাড়াতে হলে তাদেরকে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের দিকে যেতে হবে। তাতে ব্যান্ডউইথের চাহিদাও বাড়বে।
এছাড়া তৃতীয় প্রজন্মের মোবাইল ফোন প্রযুক্তি বা থ্রিজি চালু হলেও ব্যান্ডউইথের চাহিদা ও ব্যবহার বাড়বে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ভারতীয় প্রতিনিধি দলটি বাংলাদেশ থেকে আলোচিত রাজ্যগুলোর প্রত্যেকটির জন্য ১০ গিগাবাইট করে ব্যান্ডউইথ আমদানির প্রস্তাব দিয়েছেন।
বর্তমানে বাংলাদেশে ব্যান্ডউইথ সামর্থ্য ২৫০ গিগাবাইট প্রতি সেকেন্ড (জিবিপিএস)। এর মধ্যে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলের রয়েছে ২০০ গিগাবাইট। দেশে বর্তমানে মাত্র ৪২ গিগাবাইট ব্যান্ডউইথ ব্যবহৃত হয়। বাকী ২০৮ গিগাবাইট ব্যান্ডউইথই অব্যবহৃত থেকে যাচ্ছে।
ভারতে সেভেন সিস্টার নামে পরিচিত রাজ্যগুলোর জন্য ব্যান্ডউইথ আমদানি করতে চায় ভারত। তারা বাংলাদেশের আখাউড়া অংশ দিয়ে ত্রিপুরা এবং বাংলাবান্ধা অংশ দিয়ে দার্জিলিং হয়ে ব্যান্ডউইথ নিতে চায়। তবে এসব অংশে লিংক ক্যাবল নেই। বিষয়টি চূড়ান্ত হলে লিংক লাইন স্থাপন করতে হবে।
এদিকে বাংলাদেশ থেকে ব্যান্ডউইথ, সড়ক ও নৌপথের ট্রানজিটের পাশাপাশি নতুন করে টেলি-ট্রানজিট সুবিধা চেয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। এ সুবিধার আওতায় তারা বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে অপটিক্যাল ফাইবার নিয়ে যাবে।