প্লুটোর বরফাচ্ছাদিত ছবি

(প্রযুক্তি প্রতিদিন) মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার একটি অনুসন্ধানী নভোযান এবার প্লুটোর বরফাচ্ছাদিত পৃষ্ঠের ছবি তোলার কাজ শুরু করতে যাচ্ছে।
আমাদের সৌরজগতে ‘নয়টি গ্রহ’ আছে—এমন ধারণা নিয়ে অনেকে বড় হয়েছেন।
প্লুটোকেও আগে গ্রহ বলে গণ্য করা হতো। কিন্তু বিজ্ঞানীদের কাছে এটি ২০০৬ সাল থেকে বামন গ্রহ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। পৃথিবী বাদে বাকি গ্রহগুলোর কাছাকাছি ইতিমধ্যে বিভিন্ন রোবটযান পাঠানো হয়েছে, এমনকি অনেক বেশি দূরের ইউরেনাস ও নেপচুনেও। বাকি ছিল কেবল প্লুটো। এবার সেখানেও অভিযান চালানো হচ্ছে। গ্রহের মর্যাদা হারালেও প্লুটোর ব্যাপারে অনুসন্ধানের আকাঙ্ক্ষা বিজ্ঞানীদের এতটুকু কমেনি। বামন গ্রহটির কাছাকাছি পৌঁছাতে নিউ হরাইজনস নামের ওই মহাকাশযান নয় বছরে ৫০০ কোটি কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছে। প্লুটোর কাছাকাছি যাওয়ার এই অভিযান জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের গ্রহবিষয়ক অন্বেষণের তালিকায় সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন হিসেবে গণ্য হচ্ছে। আর এতে বামন গ্রহটি নিয়ে নিবিড় গবেষণার প্রথম সুযোগ তৈরি হয়েছে।
ছবিগুলো বিশ্লেষণের ওপর ভিত্তি করে নিউ হরাইজনস চলতি বছরের মধ্যেই প্লুটোর আরও কাছাকাছি অবস্থানে যাওয়ার চেষ্টা করবে। মহাকাশযানটি এখনো প্লুটো থেকে ২০ কোটি কিলোমিটার দূরে রয়েছে। আর তাই এ অবস্থান থেকে তোলা প্লুটোর ছবিগুলো হবে অজস্র তারার মধ্যে একটি আলোর কণিকার মতো। আর তা দেখে বামন গ্রহটি সম্পর্কে খুব স্পষ্ট জানার সুযোগ নেই। তবে এ অভিযানের সঙ্গে যুক্ত বিজ্ঞানীরা বলছেন, মহাকাশযানটির গতিপথ সঠিকভাবে নির্ধারণের জন্যই এসব ছবি তোলা প্রয়োজন।
যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থবিদ্যা গবেষণাগারের বিজ্ঞানী মার্ক হোল্ডরিজ বলেন, বারবার প্লুটোর ছবি তোলার জন্য তাঁরা অপটিক্যাল নেভিগেশন প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন।
নিউ হরাইজনস যখন প্লুটোর আরও কাছাকাছি যাবে, তখন মহাকাশযানটির গতি হবে প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ১৪ কিলোমিটার। ফলে বামন গ্রহটির কক্ষপথের ভেতরে প্রবেশ করা অসম্ভব হবে এবং দ্রুতগামী মহাকাশযানটি তখন অবশ্যই সরল পথে এগোবে। নিউ হরাইজনসের আগামী ১৪ জুলাই প্লুটোর সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থানে পৌঁছানোর কথা। তখন বামন গ্রহটির উপরিতল থেকে মহাকাশযানটির দূরত্ব হবে প্রায় ১৩ হাজার ৬৯৫ কিলোমিটার।