পৃথিবীর জন্য নতুন হুমকি!

(প্রযুক্তি প্রতিদিন) পৃথিবীর জন্য বড় ধরনের হুমকি হয়ে আছে ‘১৯৫০ ডিএ’ ও ‘২০১৩টিভি ১৩৫’ নামের দুটি গ্রহাণু। ২০৩২ ও ২৮৮০ সালে এই গ্রহাণু দুটির সঙ্গে পৃথিবীর সংঘর্ষ ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। এ ধরনের গ্রহাণু পৃথিবীতে আঘাত হানলে তা ভয়াবহ এক ধ্বংসযজ্ঞই হবে।
তবে বিজ্ঞানীরা এই ধ্বংসযজ্ঞ ঠেকানোর জন্য কাজ শুরু করেছেন। তাঁরা আশা করছেন, পৃথিবীতে আঘাত হানার আগেই এইসব গ্রহাণুকে ঠেকিয়ে দিতে পারবেন তাঁরা।
দীর্ঘদিন ধরেই পৃথিবী বাসীর কাছে আতঙ্ক হয়ে রয়েছে ‘১৯৫০ ডিএ’ গ্রহাণুটি। গবেষকেরা বলছেন, পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে গ্রহাণুটি। পৃথিবীতে আঘাত হানার আশঙ্কা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা দাবি করেছেন, ভয়ংকর ও দ্রুতগতির গ্রহাণুটির সঙ্গে পৃথিবীর সংঘর্ষে মানব সভ্যতা বিলীন হয়ে যেতে পারে। আশার খবর হলো, এই গ্রহাণুর গতি পরিবর্তন ও মহাকাশে এটিকে চূর্ণবিচূর্ণ করে এর গতি থামানো সম্ভব বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
বিশাল আকারের এই গ্রহাণু আঘাত হানলে বিশাল ক্ষয়ক্ষতি হবে। যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকেরা দাবি করছেন, মহাকাশে যদি ‘১৯৫০ ডিএ’গ্রহাণুকে আঘাত করে টুকরো করে দেওয়া হয় তবে তা পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে এবং এর প্রভাব আরও মারাত্মক হতে পারে। এর পরিবর্তে এই গ্রহাণুর পৃষ্ঠে পরিবর্তন এনে যদি গতি পরিবর্তন ও একেবারে মহাকাশে একে ভেঙে দেওয়া সম্ভব হয় তবেই পৃথিবীকে এই গ্রহাণুর আঘাত থেকে বাঁচানো যাবে।
এটি ২৮৮০ সালের ১৬ মার্চ পৃথিবীর কাছে আসতে পারে। অর্থাত্ ৩৫ প্রজন্ম পরে এই গ্রহাণুটি পৃথিবী বাসীর জন্য হুমকি হবে। ধেয়ে আসা গ্রহাণুটির ব্যাস এক কিলোমিটার। এটি ঘণ্টায় ৩৮ হাজার (৬১ হাজার ১৫৫ কিলোমিটার) মাইল গতিতে পৃথিবীতে আঘাত করতে পারে।

এই প্রজন্মের মানুষের জন্যই আরেকটি আতঙ্কের নাম ‘২০১৩টিভি ১৩৫’ গ্রহাণু। এই গ্রহাণুটি পৃথিবীতে আঘাত হানতে পারে বলে আশংকা করছেন বিজ্ঞানীরা। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসার গবেষকেরা এ বিষয়ে আতঙ্কিত না হওয়ারই পরামর্শ দিয়েছেন। আগামী ১৮ বছরের মধ্যে পৃথিবীর কক্ষপথে গ্রহাণুটি চলে আসতে পারে বলে আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন ইউক্রেনের গবেষকেরা। গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর পৃথিবীর জন্য বিপজ্জনক গ্রহাণুটি কক্ষপথ অতিক্রম করেছে। তবে এটি আবার ২০৩২ সালের ২৬ আগস্ট পৃথিবীর কক্ষপথের কাছে চলে আসবে।
নাসার গবেষকেরা হিসাব করে দেখেছেন, বিশালাকার এ গ্রহাণুটি পৃথিবীতে আছড়ে পড়লে যে ধ্বংসযজ্ঞ তৈরি হবে, তা দুই হাজার ৫০০ পারমাণবিক বোমার সমান। এক হাজার ৪৪০ ফুট প্রশস্ত গ্রহাণুটি আঘাত হানলে পৃথিবীর ১০ লাখ বর্গমাইল এলাকা হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ‘২০১৩টিভি ১৩৫’ নামের গ্রহাণুটির পৃথিবীতে আঘাত হানার আশঙ্কা খুবই কম। ৪৯ হাজার বারের মধ্যে মাত্র একবার এটি পৃথিবীতে আঘাত করতে পারে।