গেমিং চ্যাটরুমেও আড়ি পাতছে এনএসএ

(প্রযুক্তি প্রতিদিন) এনএসএ-জিসিএইচকিউ অনলাইন গেমগুলোয় আকর্ষণীয় চরিত্রের বেশে হাজির হয়। ওয়ার্ল্ড অব ওয়ারক্র্যাফটে রয়েছে এলভস, অর্কসহ শত ধরনের কাল্পনিক চরিত্র। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বিশেষ সফটওয়্যারের সাহায্যে এগুলোরই যেকোনোটির অথবা একসাথে সবগুলোর বেশেই হাজির হয় গেমারদের স্ক্রিনে। আবার অনলাইন মাল্টিপ্লেয়ার শুটার গেমগুলোয়ও ছদ্মবেশে যোগ দিয়ে খেলায় অংশ নেয় সংস্থা দু’টির এজেন্টরা। বিশেষ করে মাইক্রোসফটের এক্সবক্স লাইভ কমিউনিটিতে এদের উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি। ‘ওয়ার্ল্ড অব ওয়ারক্র্যাফট’-এর মতো গেমগুলোর ভার্চুয়াল জগতেও তথাকথিত সন্ত্রাসীদের খুঁজে বেড়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি (এনএসএ) ও ব্রিটেনের গভর্নমেন্ট কমিউনিকেশনস হেডকোয়ার্টারস (জিসিএইচকিউ)। এনএসএর সাবেক কর্মী এডওয়ার্ড স্নোডেনের ফাঁস করা নতুন নথিতে দেখা গেছে, অনলাইন গেমিংয়ের চ্যাটরুমে গেমাররা যা আলাপ-আলোচনা করেন, সবই রেকর্ড করে মার্কিন ও ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা দু’টি। সন্ত্রাসীরা বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত ইন্টারনেট যোগাযোগ ব্যবহার করে কর্মকাণ্ড পরিচালনায়। এর মধ্যে রয়েছে ই-মেইল, ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রটোকল (ভিওআইপি), চ্যাট, প্রক্সি ও ওয়েব ফোরাম। বর্তমানে অনলাইন গেমগুলোকে নিরাপদ সম্মেলনস্থল হিসেবে ব্যবহার করছে সন্ত্রাসীরা।
এনএসএর ভাষ্য অনুযায়ী, ‘পূর্ণাঙ্গ সামরিক প্রশিণ শুধু ব্যক্তিকেই দেয়া সম্ভব, কিন্তু কোনো ল্য অর্জনে সম্পূর্ণ নিখুঁত না হলেও চলে।’ বর্তমানে বিশ্বব্যাপী এক কোটি ২০ লাখেরও বেশি ব্যক্তি নিয়মিত ‘ওয়ার্ল্ড অব ওয়ারক্র্যাফট’ গেমটি খেলেন, যা গ্রিসের মোট জনসংখ্যার চেয়েও বেশি। লিন্ডেন ল্যাবসের ‘সেকেন্ড লাইফ’ ও মাইক্রোসফটের ‘হালো’ গেমটি খেলেন আরো কোটিখানেক গেমার। এনএসএর মতে, এ গেমগুলো সন্ত্রাসীদের লুকিয়ে থাকার আদর্শ স্থান। কেননা এগুলো জনসম্মুখে করা হলেও এত লোকের মধ্যে কে কী করছে, তা চোখে চোখে রাখা রীতিমতো কষ্টকর। এ দিকে অনলাইন গেমগুলোয় এ ধরনের আড়ি পাতা কার্যক্রম চলে কি না, তা জানে না বলেই দাবি করেছে গেম নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। গোয়েন্দা সংস্থা দু’টি অবশ্য কিভাবে গেমারদের তথ্য সংগ্রহ করেছে কিংবা কতজনের তথ্য হাতানো হয়েছে, তা নথিতে স্পষ্ট নয়। এনএসএর দাবি, ভার্চুয়াল এ জগতে গোয়েন্দাগিরির সুফলও রয়েছে। কেননা এ ধরনের গেমের সাথে যুক্ত আছেন হাজার হাজার টেলিকম প্রকৌশলী, দূতাবাসের চালক, বিজ্ঞানী, সৈনিক ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার মানুষ।