কম দামের স্মার্টফোন : আইফোন ৫সি

(প্রযুক্তি প্রতিদিন) অবশেষে উন্মোচন করা হল অ্যাপলের বহুল প্রতীক্ষিত দুটি স্মার্টফোন আইফোন ৫এস এবং আইফোন ৫সি। অনেকদিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল যে অ্যাপল প্লাস্টিকের তৈরি আইফোন ৫সি বাজারে আনতে যাচ্ছে। ধারনা করা হয়েছিল এটিকে স্বল্পমূল্যের আইফোন হিসেবে গননা করা হবে। যদিও কন্ট্রাক্ট এর হিসেবে এটি স্বল্পমূল্যেরই আসলে যেখানে ১৬ গিগাবাইট হল ৯৯ ডলার এবং ৩২ গিগাবাইট হল ১৯৯ ডলার ২ বছরের কন্ট্রাক্ট এর সাথে। তবে কন্ট্রাক্ট ছাড়া এর মূল্য হবে ৫৫০ ডলার এবং ৬৫০ ডলার যাকে খুব একটা স্বল্পমূল্যের বলা যায় না। হার্ড কোটেড পলিকার্বনেটে গড়া এই আইফোন আদলে আসলে আইফোন ৫ এরই একটি সংস্করণ যা কিনা পাওয়া যাবে ৫ ধরনের ভিন্ন রঙে।
এর আয়তনঃ ১২৪.৪ x ৫৯.২ x ৯ মিমি (৪.৯০ x ২.৩৩ x ০.৩৫ ইঞ্চি)। ওজনঃ ১৩২ গ্রাম। ১গিগাবাইট র‍্যাম এবং ১৬ অথবা ৩২ গিগাবাইট ইন্টারনাল মেমোরি রয়েছে আইফোন ৫সিতে।
এতে ব্যবহার করা হয়েছে রিয়ার ৮ মেগাপিক্সেল (৩২৬৪x২৪৪৮ পিক্সেলস) অটো ফোকাস, এলইডি ফ্ল্যাশ, ৩০ এফপিএসে ফুলএইচডি ভিডিও রেকর্ড, এইচডিআর, প্যানোরামা এবং সেকেন্ডারি ১.২ মেগাপিক্সেল, ফেস ডিটেকশন, ফেসটাইম এবং ৩০ এফপিএসে এইচডি ভিডিও রেকর্ড সক্ষম ক্যামেরা। অপারেটিং সিস্টেমঃ আইওএস ৭
অ্যাপল এর আগে সবসময়ই নতুন একটি ডিভাইসই বাজারে আনত। আর আইফোন ৫সি এর মাধ্যমে অ্যাপল এবার ঘোষণা করল নতুন ২টি ডিভাইস। যদিও ৫সি পুরনোকে নতুন খোলসে দেয়ারই সামিল। এই কারনেই আইফোন ৫ আর বাজারে আনবে না অ্যাপল।
আইফোন ৫এস বাজারে পাওয়া যাবে এবার মূলত তিনটি রঙে- কালো, সিলভার এবং গোল্ডেন। ফোনটি প্রস্তুত করা হয়েছে হাই গ্রেড অ্যালুমিনিয়াম এ এবং সাথে আছে কাট চ্যাম্ফারড কোণার সাথে। অ্যাপল তাদের আইফোন ৫এসের মাধ্যমে বাজারে প্রথমবারের মত এনেছে মোবাইলের জন্য প্রসেসর অ্যাপল এ৭, যা কিনা একটি ৬৪বিট প্রসেসর। অ্যাপল দাবি করছে এর ফলে সবকিছু দ্বিগুণ জলদি কাজ করবে তবে বাস্তবে এটি পারফর্মেন্স বৃদ্ধি করবে ১৫-৩০ শতাংশ। অ্যাপলের দাবিমতে এ প্রসেসরে দ্বিগুণ জেনারেল পারপোস রেজিস্টার, দ্বিগুণ ফ্লোটিং পয়েন্ট রেজিস্টার, ১ বিলিয়ন ট্রান্সিস্টর এবং ১০০ বর্গ মিমি ডাই সাইজ ক্ষমতা রয়েছে। ৬৪বিট প্রসেসরের উপর নির্ভর করে এর নেটিভ অ্যাপগুলো ইতোমধ্যে আপডেট করা হয়েছে। ফলে অ্যাপগুলো প্রসেসর এবং র‍্যাম আরও ভাল করে ব্যবহার করতে পারবে। তবে যেসকল অ্যাপ ৬৪বিটে নেই সেক্ষেত্রে তেমন কোন পরিবর্তন আসছে না। তবে এর মাধ্যমে গেমিং ক্ষেত্রে আসছে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন। অ্যাপেল তাদের আইফোন ৫এসের মাধ্যমে তাদের ফোনে ওপেনজিএল ইএস ৩.০ এর সমর্থন এনেছে ফলে গেমগুলো হবে আরও প্রাণবন্ত এবং গ্রাফিক্স হবে আরও উন্নত। এছাড়াও আইওএস সেভেন আছে এক্সকোডেক সাপোর্ট। এর ক্যামেরাতেও এনেছে নানা পরিবর্তন। অ্যাপল এবার তাদের ক্যামেরায় ব্যবহার করেছে ৫ এলিমেন্টের অ্যাপলের নিজস্ব ডিজাইনের লেন্স সাথে f/2.2 অ্যাপেরেচার। ১৫ শতাংশ বড় একটিভ সেন্সর এরিয়া। আইঅএস সেভেন নিজে থেকেই অবস্থা অনুসারে নিজের সেটিংস পরিবর্তন করে নিতে পারবে ক্যামেরার। ফ্ল্যাশে ব্যবহার করা হয়েছে ট্রু টোন প্রযুক্তি যার ফলে ১০০০ ধরনের ফ্ল্যাশ সুবিধা অবস্থাভেদে পাওয়া যাবে। এটি ফ্ল্যাশে ছবির মান যেন সত্যিকার মতন হয় তার জন্য করা। এছাড়া আছে অটো ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন সুবিধাও। বারস্ট মোডে প্রতি সেকেন্ডে তোলা যাবে ১০ টি ছবি এবং কোন ছবিটি আসলেই ভাল তা আইওএস নিজেই নির্বাচন করতে পারবে। এইচডি ভিডিও রেকর্ডিং করা যাবে ১২০ফ্রেম রেট পার সেকেন্ডে ফলে চাইলেই কোন ভিডিওর একটি অংশ স্লো-মো তে নিয়ে দেখা যাবে। এছাড়া আছে ২৮ মেগাপিক্সেল এর প্যানোরমা ছবি তোলার সুবিধাও।