ইলোপের নেতৃত্বে ঘুরে দাড়াচ্ছে নকিয়া

(প্রযুক্তি প্রতিদিন) মোবাইলফোনের বাজারে দীর্ঘ ১৪ বছর কর্তৃত্ব করা নকিয়ার অবস্থান বর্তমানে অনেক পিছনে। স্মার্টফোনের বাজারে দিন দিন দখল কমছে নকিয়ার। এখন তা মাত্র ৩ শতাংশ। অথচ অ্যাপল ও স্যামসাংয়ের বাজার দখল ৫০ শতাংশের বেশি। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে টেলিকম খাতের গতিবিধি নিয়ে গবেষণা করছেন গার্টনারের বিশ্লেষক ক্যারোলিনা মিলানেসি। তিনি জানিয়েছেন, নকিয়ার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইলোপের দায়িত্ব গ্রহণের পর অনেকটাই ঘুরে দাড়িয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানে ব্যক্তিগত বিনিয়োগ নেই এমন কাউকে খুব দরকার ছিল নকিয়ার। ২০১০ সালে ফিনল্যান্ডের এ প্রতিষ্ঠান নকিয়ার দায়িত্ব নেন স্টিফেন ইলোপ। তিনি নকিয়ার পুনর্গঠন ও সার্বিক উন্নতির জন্য আগের তুলনায় অনেক কম সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। ইলোপ যোগদানের পরেই মাইক্রোসফটের উইন্ডোজ ফোন অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয় নকিয়া। এর পর থেকে নকিয়া কাজ শুরু করে লুমিয়া সিরিজ নিয়ে। পতন ঠেকাতে নকিয়ার হাল ধরা এবং যেকোন ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে ও বাস্তবায়ন করতে উৎসাহ দিচ্ছেন ইলোপ। এর ফলে যেমন দ্রুততার মধ্যে নতুন সেলফোন আনছে নকিয়া, তেমনি অন্যান্য সিদ্ধান্তও দ্রুত বাস্তবায়ন হচ্ছে। শুরুতে
বড় কোনো সাফল্য পাই নি মাইক্রোসফটের উইন্ডোজ ফোন। তখন ইলোপ জানিয়েছিলেন, দুই বছরের মধ্যে উইন্ডোজ ফোন ব্যবহারের এ সিদ্ধান্ত সুফল দেবে। এখন তিন বছর হতে চললেও প্রত্যাশার কাছাকাছি সাফল্য আসেনি। অন্যদিকে কম সময়ের মধ্যেই নতুন মডেল বাজারে আনার চর্চা এখন নকিয়ার কার্যক্রমে পরিলক্ষিত হচ্ছে। আসলে নষ্ট করার মতো সময় একদমই নেই বলে মনে করেন ইলোপ। নকিয়া সিমবিয়ান অপারেটিং সিস্টেম চালিত এন৮ মডেলের ফোনটি বাজারে আনতে ২২ মাস সময় নষ্ট করেছিল। অথচ ছয় থেকে আট মাসের ব্যবধানে নতুন নতুন উইন্ডোজ ফোন বাজারে আনা সম্ভব। এর কারণ আমরা এখন অনেক বেশি গতিতে এগোচ্ছি।
অল্প সময়ের ব্যবধানে কম দামি ফিচারফোনও আনছে নকিয়া। ইলোপের মতে, নকিয়া আগে গুণগত মান ও ফিচারের বিষয়ে বেশি মনোযোগী ছিল। এখন উপযুক্ত সময়েই সেলফোন বাজারে আনার ব্যাপারে বেশি যতœবান হচ্ছে।
নকিয়া লুমিয়া ১০২০-এর ইমেজিং সফটওয়্যারের নকশাকার স্যামুলি হ্যানিয়েন জানিয়েছেন, ফোনটি উন্মোচন করার আগে তিনি কৌতূহলোদ্দীপক কানাঘুষা শুনছিলেন। তিনি এর তুলনা করেন এক দশক আগে নতুন ফোন বাজারে আনা নিয়ে যে কানাঘুষা শোনা যেত তার সাথে। একটা সময় ছিল যখন আমরা কোনোভাবেই হাল ছাড়তাম না। দীর্ঘক্ষণ কাজ করতাম। দিনের যেকোনো সময় ডাকলেই নির্বাহীরা এগিয়ে আসতেন। আমরা সেই উদ্যম খানিকটা হারিয়ে ফেলেছি। ইলোপের ব্যক্তিত্ব আকর্ষণীয়। অনেক সফল সিইওর সাথে তার মিল রয়েছে। তিনি খুব সহজেই কর্মীদের আপন করে নিতে পারেন। তার সাথে মিল রয়েছে অ্যাপলের সিইও প্রয়াত স্টিভ জবস ও মাইক্রোসফটের স্টিভ বলমারের।